► প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের স্কুলব্যাগের ওজন নিয়ে হাইকোর্টের সাম্প্রতিক সময়ের রায় অবশ্যই শিশুবান্ধব ও মানবিক হয়েছে। আধুনিক অভিভাবকরা তাঁদের শিশুর সুদূর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শিশুদের বর্তমানকে করে তুলছে দুর্বিষহ।
শিশুকে মানবিকতা ও নৈতিকতার পূর্ণ শিক্ষা না দিয়ে তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে লেখাপড়ার নামে আদেশের বোঝা। ফলে শিশুর মস্তিষ্ক হচ্ছে অন্তঃসারশূন্য। শিশুরা হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক। বর্তমানে প্রথম সারির স্কুলগুলোর ভর্তি পরীক্ষা দেখে মনে হয়, যেন বিসিএসের মিনি সংস্করণ। শহুরে শিশুদের কাছে বৃষ্টির দিন ফুটবল খেলা, উন্মুক্ত আকাশে ঘুড়ি ওড়ানো—এখন রূপকথার গল্পই মনে হবে। আজকাল শিশুদের জীবন কোচিং সেন্টার, হাউস টিউটর ও কম্পিউটার গেমের বৃত্তে বন্দি। কিন্তু বেশি দিন আগের কথা নয়, খেলাঘর, কচিকাঁচার আসরের মতো সংগঠনগুলো শিশুদের কাকলিতে মুখরিত থাকত। পাড়া-মহল্লায় বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে হতো নানা ধরনের শিশুতোষ প্রতিযোগিতার আয়োজন; যার মাধ্যমে একটি শিশু অর্জন করত সামাজিক ও মানবিক দক্ষতা। তাই শিশুদের বইয়ের বোঝা থেকে মুক্তি দিয়ে আনন্দপূর্ণ শিক্ষার জীবন দিতে হবে। এ জন্য সর্বপ্রথম অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। অভিভাবকরা যেন তাঁদের সন্তানকে গ্রন্থকীট হিসেবে গড়ে না তোলেন, মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন পরিপূর্ণ মানব হিসেবে গড়ে তোলেন। তখন সমাজ ও রাষ্ট্রও পাবে আদর্শ নাগরিক।
এম এ শাক্কুর আলম
জিনজিরা, ঢাকা।
► আগে কোচিং ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। ক্লাসরুমের দিকে বেশি নজর দিতে হবে।
মো. নাদিম আদি
সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
► আমরা পাঠ্যসূচির মধ্যে জ্ঞান বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন এমন অনেক বিষয় জুড়ে দিচ্ছি, দেওয়া হয়েছে, যা তার ব্যবহারিক জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তাই বাস্তবমুখী শিক্ষাক্রম চালু করতে হবে।
কাজী ফরিদউদ্দীন আক্তার
প্রবর্তক মোড়, পাঁচলাইশ মোড়, চট্টগ্রাম।
► খুব ভোরে ক্লাস শুরু হওয়ার কারণে বাচ্চারা ঠিকমতো নাশতা খেয়ে যেতে পারে না। অনেকে অভুক্ত অবস্থায় স্কুলে যায়। তাই অভিভাবকরা বাচ্চাদের সঙ্গে খাবার দিয়ে দেন। আবার অনেক স্কুলেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা নেই। ফলে শিশুদের পানিও বহন করতে হয়। এসব কারণেও তার ব্যাগ ভারী হয়। আমরা ছোটবেলায় স্কুল-কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও বই বহন করতাম না। শিক্ষাব্যবস্থা এখন বহুমাত্রিক হয়ে গেছে। প্রাইমারি শিক্ষার বেহালের কারণে কিন্ডারগার্টেন, ক্যাডেট কিন্ডারগার্টেন, মাদ্রাসা কিন্ডারগার্টেন চালু হয়েছে। তাদের কোনো দক্ষ শিক্ষক নেই। তাই এসব বাদ দিয়ে যদি একক সিলেবাসের মধ্যে সব শিক্ষাকে আনা যায়, তাহলেই কেবল বইয়ের বোঝা কমানো সম্ভব।
মিজানুর রহমান
বানাসুয়া, কুমিল্লা।
► ছয়টি ক্লাসের পরিবর্তে তিনটি করে ক্লাস প্রতিদিন রাখলে ব্যাগের ওজন কমানো যাবে।
নাদিম খান
ভাইজোড়া, পিরোজপুর।
► দুইবারে বই দিয়ে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যায়। প্রথম ছয় মাসে পার্ট-১ এবং দ্বিতীয় ছয় মাসে পার্ট-২ পড়তে পারবে। এতে তাদের বইয়ের বোঝা অর্ধেকে নেমে আসবে। এ ছাড়া হোমওয়ার্কের খাতার পরিবর্তে শিট ব্যবহার করতে হবে।
এইচ কে নাথ
পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম।
► বিশেষ করে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে বাণিজিক মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
আজহারুল ইসলাম সরকার
আহ্বায়ক, শিক্ষা ঐক্য, নরসিংদী।
► আগের শিশুদের বইয়ের বিষয় কমাতে হবে। একের ভেতরে পাঁচ, এ ধরনের বই করতে হবে। বই কম হলে শিশুরা হাতে করেই নিতে পারবে।
মো. মোকাদ্দেস হোসাইন সোহান
গ্রামপাঙ্গাসী, চানপাড়া, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ।
► বইয়ের বোঝা কমিয়ে স্কুলের দিকে মনোযোগী করতে হবে। কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।
ফারুক আহমেদ
বাগমারা, রাজশাহী।
► কোনো কোনো প্রাক-প্রাথমিক স্কুল তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থের দিকেই বেশি নজর দেয়। এতে শিশুদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শৈশবে কোনো শিশু মেরুদণ্ডের কোনো সমস্যায় আক্রান্ত হলে পরবর্তীকালে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে এখন এটি বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। আইন বাস্তবায়নে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি অবহেলা করে, তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাকিবুল প্রিয়
রূপসা, সিরাজগঞ্জ।
► পাঠ্য বইয়ের বাইরে অতিরিক্ত বই পড়ানোর বাণিজ্যিক সুবিধা নিচ্ছে অনেক স্কুল। নিজেদের তৈরি সিলেবাস বাদ দিয়ে সরকারি সিলেবাস অনুযায়ী পড়াতে হবে।
মো. বাদল খান
উত্তর কাটিপাড়া, নলছিটি, ঝালকাঠি।
► বেশি বই শিশুর মনে ভীতির সৃষ্টি করে। বইয়ের সংখ্যা কমিয়ে নৈতিক বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে।
মোহাম্মদ নুর উদ্দীন
মাস্কাট, ওমান
► শিশুশিক্ষা নিয়ে নৈরাজ্যের এই সময়ে কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। সবাই দায়িত্বটি পালন করুন।
নৌশিন নাওয়াল সুনম
সৌহার্দ্য, ঈশ্বরদী, পাবনা।
► ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে। ’ তাই বলে তাকে সব বিষয়ে পণ্ডিত বানানোর চেষ্টা করা যাবে না। খেলাধুলা ও আনন্দের মধ্য দিয়েই তাদের শিক্ষা দিতে হবে। শিশুদের মন থেকে পরীক্ষাভীতি দূর করতে প্রাথমিক শিক্ষাকে পরীক্ষামুক্ত রাখতে হবে। শুধু শ্রেণিভিত্তিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বই-খাতার বোঝা তাদের পিঠে চাপিয়ে দেওয়া অযৌক্তিক ও অমানবিক। খাতার সংখ্যা কমিয়ে একটি খাতায় সব কিছু লেখার ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক মা-বাবারই লক্ষ্য থাকে—সন্তান বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা এমন কোনো পেশায় যাবে, যেখানে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়। এই সর্বনাশা প্রবণতা থেকে তাঁদের সরে আসতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হবে সন্তান যেন বড় হয়ে জ্ঞানী, গুণী, সৎ, আদর্শবান ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
বিপ্লব
ফরিদপুর।
► ‘আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা/ তোমরা এ যুগে সেই বয়সেই লেখাপড়া কর মেলা। ’ এই লেখাপড়া কি সত্যিকারার্থেই লেখাপড়া, নাকি আমরা পড়ালেখার নামে শিশুদের শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করছি? প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ব্যাগ বহন না করার যে নির্দেশ আদালত দিয়েছেন, তা সময়োপযোগী হয়েছে। এটা বাস্তবায়িত হলে শিশুদের পড়ালেখা হবে আনন্দদায়ক। কিন্তু আমরা তো আইনই করি, ব্যবহার আর পুরোপুরিভাবে হয় না। এর আগে ২০১৪ সালে এমন নির্দেশ এসেছিল, পরিপত্র জারি হয়েছিল। লাভ কী হলো? আইন করা অবশ্যই প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি দরকার হচ্ছে আইনের প্রয়োগ। কিন্ডারগার্টেনগুলো তো কোনো নির্দেশনারই তোয়াক্কা করে না। কর্তৃপক্ষকে বলব, নির্দেশনা দেওয়াই শুধু নয়, নির্দেশনা মানতে বাধ্য করুন।
সাবিনা সিদ্দিকী শিবা
ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ।
► শিক্ষার নামে কোমলমতি শিশুদের অতিরিক্ত বইয়ের বোঝা যেমন অমানবিক, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পড়ার চাপে তারা সব সময় বড় পেরেশান। শৈশবের সুন্দর সময় থেকেও বঞ্চিত। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হয়েছে। তাই দ্রুত পাঠ্য বইয়ের সংখ্যা কমাতে হবে এবং শিশুদের আনন্দময় শৈশব, নির্মল পরিবেশে প্রকৃত শিক্ষা বিস্তারে আন্তরিক হতে হবে। তবেই এই শিশুরা আগামী দিনে সফল মানবসম্পদে পরিণত হবে।
আবদুর রাজ্জাক নাছিম
চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ।
► হাইকোর্টের রায়কে ধন্যবাদ জানাই। শিশুদের বইয়ের বোঝা কমানোর জন্য পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা কমাতে হবে। এটা যারা না মানবে তাদের শাস্তি দিতে হবে।
শেখ মোহাম্মদ আলী
তালতলা বাজার, সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ।
► শিশুর বইয়ের বোঝা কমাতে সবচেয়ে সহজ উপায় নিজেদের তৈরি করা বাণিজ্যিক সিলেবাস বাদ দিয়ে সরকারি সিলেবাস অনুযায়ী পড়ানো।
সানজিদা আফরোজ লাকি
কাঠিপাড়া, নলছিটি, ঝালকাঠি।
► বোর্ডের বইয়ের তালিকা অনুসরণ, বাড়ির কাজের খাতা সপ্তাহে দু-তিনটি বহন, স্কুলে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা ইত্যাদি করলে ব্যাগের বোঝা কমবে। এ ছাড়া স্কুল লাইব্রেরি ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
রাহাত রাব্বানী
মাইলস্টোন কলেজ, উত্তরা, ঢাকা।
► শিশুদের ব্যাগের বোঝা কমাতে অপ্রয়োজনীয় বই বাদ দিতে হবে, পরীক্ষার সিলেবাস কমাতে হবে, প্রতিদিন ক্লাস পিরিয়ড সংখ্যা দু-একটি করে কমাতে হবে।
জাহাঙ্গীর কবীর পলাশ
শ্রীধরপুর, বাড়ৈখালী, মুন্সীগঞ্জ।
► অর্থহীন অনেক বিষয় না পড়িয়ে সত্যিকারের জ্ঞান বিকশিত হয় এমন বিষয় পড়াতে হবে।
নজরুল ইসলাম খান
নতুন জুরাইন, ঢাকা।
► শিশুদের স্কুলব্যাগের ওজন কমাতে দুই সেট বইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে বই বহন করতে হবে না। বাসায় এক সেট থাকবে, আর স্কুলে এক সেট থাকবে। ভারী ব্যাগ বহন করতে গিয়ে অনেক বাচ্চাকেই কুঁজো হয়ে হাঁটতে হয়। এতে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। কঠোর নিয়ম করেই বোঝা কমাতে হবে।
রৌদ্র মালিহা
সিএ স্টুডেন্ট, তেজগাঁও, ঢাকা।
► খাবার কিংবা পানির বোতল শিশুর ব্যাগে না দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিশুদের জন্য বিদ্যালয়েই মানসম্মত বিশুদ্ধ খাবার ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে পারে।
আব্দুল্লাহ্ আল-হাদী সোহাগ
ব্যাংক কলোনি, সাভার, ঢাকা।
► শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। এই শিক্ষা নিতে গিয়েই বইয়ের বোঝায় শিশুর মেরুদণ্ড বিকল হয়ে যাচ্ছে। বোঝা কমান। পঞ্চম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষাব্যবস্থাও বাতিল করুন। কিন্ডারগার্টেনগুলোকে শৃঙ্খলায় আনুন।
মাজহারুল ইসলাম লালন
নকলা, শেরপুর।
► রাজধানীসহ দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নেই শিশুরা স্কুলব্যাগ বহন করতে বাধ্য হচ্ছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে আইন করতে হবে। আইন মানা হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য সর্বদলীয় কমিটি করতে হবে।
মো. আতিকুল্লাহ
গফরগাঁও, ময়মনসিংহ।
► টেক্সট বইয়ের ওপর জোর দিতে হবে। গাইড নামের অভিশাপ থেকে আমাদের শিশুদের বের করে নিয়ে আসতে হবে। শিশুরা যদি গাইড কিংবা নোট থেকেই শিখবে, তাহলে শিক্ষকের কী দরকার? পাঠ্যক্রম থেকে অপ্রাসঙ্গিক সব কিছু বাদ দিতে হবে।
এস আর শানু খান
মনোখালী, শালিখা, মাগুরা।
► প্লে, নার্সারি, কেজি ইত্যাদি ক্লাসের শিশু শিক্ষার্থীদের ব্যাগের ওজন তাদের বয়স ও নিজের ওজনের সঙ্গে সংগতি রেখে কোনো অবস্থায়ই এক থেকে দুই কেজির বেশি হতে পারে না কিংবা হওয়া উচিত নয়। এর বেশি হলে সেটি অবশ্যই অমানবিক হয়ে দাঁড়াবে। এমনিতেই এখন বাচ্চারা আগের মতো ফ্রি মুভমেন্ট করতে পারছে না। নেই খেলার মাঠ, নেই বিনোদনের স্থান। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়া-আসা, তারপর কোচিংয়ে যাওয়া-আসা, স্পেশাল কোচিং ইত্যাদির চাপে পিষ্ট একজন শিক্ষার্থীর মুখের দিকে তাকানো যায় না। প্রধানমন্ত্রী জোর দেওয়ার পর বছর দুই আগে পরিপত্র জারি হয়েছিল। শিশুর ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ব্যাগ বহন বন্ধ হয়নি। এবার আইন প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইন প্রণয়ন শুধু নয়, বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য আগে থেকে রাখুন।
এস এম রওনক রহমান আনন্দ
সৌহার্দ্য, ঈশ্বরদী, পাবনা।
► বিদেশের অনেক স্কুলেই একটি ল্যাপটপ, ট্যাব অথবা স্মার্টফোন নিয়ে শিশুরা স্কুলে যাচ্ছে। ডেনমার্কের কোনো স্কুলে ছেলেমেয়েরা স্কুলব্যাগ বা বই নেয় না। ব্রিটেনের ৮৯ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ট্যাব দিয়ে পড়শোনা করে। মালয়েশিয়ার স্কুলগুলোর নামই হয়ে গেছে স্মার্টস্কুল। বাংলাদেশের স্কুলেও ডিজিটাল ক্লাসরুম হয়েছে। তাই দেশকে ডিজিটাল করতে হলে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।
তৌহিদুল ইসলাম রবিন
লাকসাম, কুমিল্লা।
► অস্ট্রিয়ায় কেবল মাতৃভাষা, গণিত, বিজ্ঞান ও ইংরেজি—এই চারটি বিষয়ে পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। শিশুদের সব বিষয় না পড়িয়ে মৌলিক বিষয়ে পড়ানো ও পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবতে হবে।
মো. দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া
লাকসাম, কুমিল্লা।
► আইন হচ্ছে, আইন হবে। কিন্তু প্রয়োগটা কোথায়? কোন আইনের প্রয়োগ আমাদের সমাজে এ পর্যন্ত স্বস্তি এনে দিয়েছে? এই ষাটোর্ধ্ব আমি ক্লাস এইট-নাইনে যা পড়েছি এখন আমার ক্লাস টু-এর নাতি তা-ই পড়ে। জানি না, এতটা দ্রুত এগিয়েছি কি না আমরা! তবে ছোট ছোট কোমলমতি বাচ্চার ঘাড়ে ১০-১৫ কেজি ওজনের ব্যাগ সত্যি আমাদের কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে।
জালাল উদ্দিন আহমেদ
তাজমহল রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
► পাঠ্য বইয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করা এবং হাতে-কলমে অনেক বিষয় শেখানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে শিশু সৃজনশীল ও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হবে।
ফাতেমা তুজ জোহরা
সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম।
► বেসরকারি স্কুলগুলোতে নির্ধারিত বইয়ের অতিরিক্ত পড়ানো হয় কেন? আইনের মাধ্যমে বেসরকারি স্কুলগুলোকে নিয়ন্ত্রণে এনে শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে।
আলমগীর ইমন
লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম।
► বইয়ের বোঝা কমাতে অহেতুক সিলেবাস কমাতে হবে।
ইয়াছিন খন্দকার লোভা
সিলোনিয়া বাজার, উত্তর জায়লস্কর, ফেনী।
► কিন্ডারগার্টেন গজিয়ে উঠছে ব্যাঙের ছাতার মতো। এ থেকেই স্পষ্ট বাণিজ্য করার লক্ষ্য থেকেই একটি মহল শিশুদের পণ্য বানাচ্ছে।
মোমিন হৃদয়
নাটুয়ারপাড়া, কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ।
► বাচ্চাদের ওপর অপ্রয়োজনীয় বোঝা চাপাবেন না। শিক্ষার নামে শাস্তি, কোচিংয়ের নামে বাণিজ্য বন্ধ করুন।
হুমায়ুন কবির বাবু
দক্ষিণ বানিয়াগাছি, বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ।
► ছেলেমেয়েদের আনন্দে আনন্দে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শেখাতে হবে। অনেক বিষয় না পড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও বিষয়ের গভীরতার দিকে শিশুদের মনোযোগী করার সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে।
সাঈদ চৌধুরী
শ্রীপুর, গাজীপুর।
► আমাদের শৈশবে ভারী ব্যাগ বহন করতে হতো না। শিক্ষার মান কি তখন খারাপ ছিল? এখন শিশুদের প্রতিযোগিতার মধ্যে ঠেলে দিয়ে বই-খাতার বোঝা মাথায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি অনুমোদনের বাইরে কোনো বই শিশুদের পড়ানো যাবে না।
মহসিন সরকার
নয়নপুর, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
► শিশুদের পক্ষে সহনীয় নয় এমন অনেক বই শিশুদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্ডারগার্টেন নিয়ে কঠোর নীতিমালা না থাকার সুযোগ নিচ্ছে বেনিয়াগোষ্ঠী।
মোহাম্মদ জামরুল ইসলাম
দক্ষিণগাঁও, সবুজবাগ, ঢাকা।
► উচ্চ আদালতের নির্দেশ যেকোনো মূল্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীকে বলব, নির্দেশ অনুসারে দ্রুত আইন প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করুন।
মোহাম্মদ আলী
বোরহানপুর, হাজারীবাগ রোড, ঢাকা।
► ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এমন একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন। কেউ কর্ণপাত করেননি। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে আমাদের কর্মকর্তাদের উদ্যোগ নিতে হবে।
কুমারেশ চন্দ্র
বাস শ্রমিক, ঝিনাইদহ টার্মিনাল।
► হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্ডারগার্টেনভিত্তিক ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের বই বিক্রিই তাদের আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। অতিরিক্ত এসব মানহীন বই কখনোই একটি শিশুর মনোজগৎ বিকশিত করতে পারে না। বরং অতিরিক্ত চাপ থেকে শিক্ষার্থীদের মনে ভয় ও পড়াশোনার প্রতি অনীহা তৈরি হয়।
সোলায়মান শিপন
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ।