ছয় মাস বয়সী কন্যাশিশু রাতে মায়ের দুধ খাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করছিল। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় বিছানা থেকে শিশুকে নিয়ে পুকুরে ফেলে হত্যা করেছেন বাবা।
আদালতে এমন স্বীকারোক্তিই দিয়েছেন সিলেটের বিয়ানীবাজারের মুড়িয়া ইউনিয়নের ঘুঙানিয়া গ্রামের উজ্জ্বল আহমদ (৩৫)। গত শুক্রবার ভোরে তিনি শিশুকে বাড়ির পুকুরে ফেলে দেন। কোলের শিশু পুকুরে পড়ল কীভাবে, এ নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা দিলে পুলিশ সন্দেহজনকভাবে উজ্জ্বলকে শনিবার আটক করে। গতকাল রোববার দুপুরে তিনি সিলেটের একটি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক ফারজানা শাকিল।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে তাহিয়া বেগম নামের ছয় মাসের শিশুর লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শিশুর মা রহিমা বেগম তাঁর স্বামী উজ্জ্বলকে সন্দেহ করছিলেন। স্ত্রীর সন্দেহ ভাঙাতে উজ্জ্বল ওই দিন নিজে বিয়ানীবাজার থানায় গিয়ে পুকুরে ডুবে শিশু মারা গেছে জানিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উজ্জ্বলকে সন্দেহ করে। শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। শনিবার সকালে তাঁকে আটক করলে ওই দিন রাতে তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় উজ্জ্বলকে।
উজ্জ্বল আহমদ পেশায় একজন ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী। বিয়ানীবাজার পৌর শহরে তাঁর প্রবাসী ভাইয়ের একটি ওয়ার্কশপ পরিচালনা করছিলেন তিনি। তাহিয়া তাঁদের একমাত্র সন্তান ছিল।
বিয়ানীবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল বাশার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, সন্দেহজনকভাবে আটকের পরপরই উজ্জ্বল ঘটনার কথা স্বীকার করেন। পরে শিশুর মাকে জানানোর পর তিনি মামলা করেন। গতকাল সকালে উজ্জ্বল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। তাঁকে আদালতে হাজির করলে তিনি শিশুহত্যার বর্ণনা দেন।
জবানবন্দিতে উজ্জ্বল বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কোনো অবস্থাতেই তাহিয়ার কান্না থামানো যাচ্ছিল না। তার মা কোলে নিয়ে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। রাত তিনটার দিকে মায়ের বুকের দুধ খেয়ে সে ঘুমিয়ে পড়লে মা-ও ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরের দিকে আবার কান্নাকাটি শুরু করলে রাগ ওঠে। একপর্যায়ে রহিমার পাশ থেকে তাহিয়াকে কোলে নিয়ে পুকুরের পানিতে ছুড়ে ফেলেন।