রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

রৌমারীতে গাছচাপায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু


পূর্বকাউয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির মেধাবি ছাত্র রুবেল মিয়া। এখন বার্ষিক পরীক্ষা চলছে।
এরই মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি দুই বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আগামীকাল রবিবার গণিত বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতো সে। কিন্তু তার আগেই গাছচাপায় মর্মান্তিক মৃত্যু হলো তার। বাড়ির পাশেই গাছ কাটতে সহযোগিতা হিসেবে রুবেলকে ব্যবহার করার সময় গাছের একটি বড় ডাল তার মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গেই তার মৃত্যু ঘটে। আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার প্রত্যন্ত সীমান্ত এলাকা পূর্ব কাউয়ারচর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ওই গ্রামের আতাবুর রহমানের বাড়ির একটি শিমুল গাছ কিনে নেয় ফুল মিয়া নামের এক কাঠ ব্যবসায়ি। ঘটনার দিন ফুল মিয়া তিনজন শ্রমিকদের নিয়ে ওই গাছ কাটতে যায়। গাছ কাটার আগে ডালপালা ছাঁটাইয়ের সময় ওই ঘটনা ঘটে।
শরবেশ আলী নামের এক গ্রামবাসী বলেন, ‘ডালাপালার সঙ্গে দড়ি বেঁধে তা টানতে দেয় নিহত রুবেলকে। হঠাৎ করে একটি ডাল রুবেলের মাথায় আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। ’ তিনি জানান, এ ঘটনার পরপরই কাঠ ব্যবসায়িরা পালিয়া গ্রাম ত্যাগ করে।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পূর্ব কাউয়ারচর গ্রামের ওয়ার্ড মেম্বার আবুল হাশেম জানান, ওই কাঠ ব্যবসায়িদের অবহেলা আর অসাবধানতার কারণেই শিশুটির মৃত্যু ঘটেছে।
পূর্ব কাউয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক জানান, রুবেল মেধাবি একজন ছাত্র। সে আমার স্কুলেই লেখাপড়া করতো। বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে সে। গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, যা শেষ হওয়ার কথা ২৪ ডিসেম্বর। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।
জানা গেছে, নিহত রুবেলের বাবা বানিচ মিয়া পেশায় একজন দিনমজুর। ১৫ দিন আগে কাজের সন্ধানে ঢাকায় গেছেন তিনি। তার মা আছাতন বেগম বলেন, ‘পোলার বাপে অনেক কষ্ট করে আয়রোজগার করে। তার খুব ইচ্ছা দুই পোলাঘরে লেহাপড়া করাবে। কিন্তু তারা আমগর সর্বনাশ কইরা দিল। ছোট বাচ্চা, তাকে দিছে দড়ি ধরে টানতে। বড় মানুষ গুলোর কিছুই হইল না মারা গেল আমার পোলা। আমি এর বিচার চাই। যারা আমার বুক খালি করল তাদের শাস্তি দাবি করছি। ’
এ ব্যাপারে রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবিএম সাজেদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই। এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। তারপরও খোঁজ নেয়া হবে।