পার্বতীপুরে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার সিঙ্গিমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু সালেহর ওপর হামলা ও নেপথ্যে ঘটনায় টানটান উত্তেজনা চলছে ওই এলাকায়। একপক্ষ বলছেন, এসএসসির পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম ফিলাপের জন্য অতিরিক্ত ফি নেওয়ার কারণে অভিভাবকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। অন্যপক্ষ বলছেন, অতিরিক্ত ফি নেওয়া হলে প্রতিকার চাওয়ার ও পাওয়ার জায়গাতো আছে। তাই বলে গায়ে হাত দিতে হবে, লাঞ্চিত করতে হবে কেন? এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দুপুরে পার্বতীপুর শহরের ঢাকা মোড়ে ‘উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতি’র ডাকে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেয়। পরে শিক্ষকরা উপজেলা চত্বরে গিয়ে নির্বাহী অফিসারের কাছে এক স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পার্বতীপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাহফুজুল ইসলাম মাহফুজ জানান, গত ৯ নভেম্বর রাত ৮টায় শহরের শহীদ মিনার সড়কে কয়েকজন সন্ত্রাসী সিঙ্গিমারী প্রধান শিক্ষকের পথরোধ করে। এ সময় প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও পরে বেধড়ক মারপিট করা হয় প্রধান শিক্ষককে। প্রধান শিক্ষক সমিতি ও সহকারী শিক্ষক সমিতি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শিক্ষার পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অপরদিকে এসএসসি পরীক্ষায় ফরম ফিলাপকারী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম, মোছাঃ হোসনে আরা, জাহেরা, ওবাইদুল, আলী হোসেন, জান্নাতুন, মোঃ মতিউর রহমান ও মোঃ শফিকুল ইসলামসহ ১৮ জন গত ১৩ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তারা বলেছেন, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ২০১৬ সালের এসএসসি ফরম পূরণের জন্য যে ফী নির্ধারণ করে দিয়েছেন তার চেয়ে ১২০০ হতে ১৩০০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিভাবক কাজী মশিউর রহমান বলেন, আমার ভাতিজি এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। তার ফরম ফিলাপের জন্য বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে পারি ৩১৮৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের জন্য। আর মানবিক বিভাগের জন্য ১০০ টাকা কম নেওয়া হচ্ছে। তবে টাকা নিয়ে কোন রশিদ দেওয়া হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে অতিরিক্ত ফী নেওয়ার কথা অস্বীকার করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ বলেন, প্রত্যেককে রশিদ দেওয়া হয়েছে। টিউশন ফী নেওয়ার বিষয়টিকে ফরম ফিলাপরে সাথে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, উভয় পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।